উপসর্গ কাকে বলে? উপসর্গের প্রয়োজনীয়তা আলোচনা কর।

নতুন শব্দ গঠনে উপসর্গের ভূমিকা আলোচনা কর।

এই পোস্ট থেকে শিক্ষার্থীরা জানতে পারবে, উপসর্গ কাকে বলে? উপসর্গের প্রয়োজনীয়তা এবং নতুন শব্দ গঠনে উপসর্গের ভূমিকা ।

উপসর্গ

উপসর্গ কাকে বলে?

”উপ’ অর্থ ‘ পূর্বে ‘ এবং ‘সর্গ’ অর্থ অবস্থান। ব্যাকরণ মতে, যে সকল বর্ণ বা বর্ণসমষ্টি কোনো ধাতু বা শব্দের পূর্বে বসে ঐ ধাতু বা শব্দের অর্থের ব্যঞ্ছনা (সম্প্রসারণ, সংকোচন, বৈপরীত্ব, পূর্ণাঙ্গতা তথা পরিবর্তন) ঘটায় তাদেরকে উপসর্গ বলা হয়।

যেমন: অ, আ, সু, বি.নি. হাফ, ফুল, ফি, পা, প্রভৃতি উপসর্গ।

 

উপসর্গের বৈশিষ্ট্যসমূহ:

  • উপসর্গ এক ধরনের অবায় জাতীয় বর্ণ বা বর্ণসমষ্টি ।
  • ভাষায়র এদের পৃথক বা স্বাধীন ব্যবহার নেই।
  • এদের নিজস্ব কোনো অর্থ নেই ।
  • এরা সব সময় শব্দ বা ধাতুর পূর্বে বসে।
  • এরা শব্দ বা ধাতুর অর্থ পরিবর্তন করতে পারে।
  • এরা নতুন শব্দ গঠন করতে পারে।

আরও পড়ুন: উপসর্গের অর্থবাচকতা নাই; কিন্তু অর্থ দ্যোতকতা আছে

উপসর্গের কাজ :

  • নতুন শব্দ গঠন করা।
  • ভাষা ও সাহিত্যের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে।।

বাংলা ২১টি, সংস্কৃত ২০টি এবং অনির্ধারিত সংখ্যক বিদেশি উপসর্গ নিয়ে বাংলা উপসর্গের সমৃদ্ধ সমাহার গড়ে উঠেছে। নতুন শব্দ গঠনে এরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

যেমন:

  • অ + নিয়ম = অনিয়ম
  • সু + সুপ্ত = সুষুপ্ত
  • নি+গ্রহ নিগ্রহ
  • ফি + বছর = ফিবছর
  • আ + হার = আহার
  • লা + জবাব = লাজবাব
  • বি+হার= বিহার।
  • ফুল + শার্ট = ফুলশার্ট ইত্যাদি।

এভাবে বিভিন্ন উপসর্গ বিভিন্ন শব্দ বা ধাতুর পূর্বে যুক্ত হয়ে নতুন নতুন শব্দ গঠন করে।

উপসর্গের প্রয়োজনীয়তা কী?

যে কোনো ভাষার প্রাণ ও চালিকা শক্তি হচ্ছে তার শব্দ ভাণ্ডার। তাই শব্দ ভাণ্ডার যত সমৃদ্ধ ও বৈচিত্র্যপূর্ণ হবে ভাষাও তত বেশি যুদ্ধ ও সৌন্দর্য বিলসিত হবে। আর ভাষার এই গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ গঠনের অন্যতম সহায়ক ও সহযোগী বিষয় হল উপসর্গ। তাই ভাষার শব্দভাণ্ডার বৃদ্ধি, সৌন্দর্য বৃদ্ধি ও ভাষার বহুমাত্রিক ব্যবহার নিশ্চিত করণের ক্ষেত্রে উপসর্গের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য।

উপসর্গের কাজ / গুরুত্ব কী?

উপসর্গ বিভিন্ন ব্যঞ্জনাপুষ্ট শব্দ গঠনের মাধ্যমে ভাষার ব্যবহারিক পরিধিকে যেমন বিস্তৃত করে তেমনি সমন্বিত ও সার্থকও করে। ভাষাকে অলংকৃত করতেও উপসর্গের ভূমিকা অপরিসীম। তাই সাহিত্যের নান্দনিকতা, প্রাঞ্জলতা, অর্থব্যক্তি প্রভৃতি সৃষ্টির জন্যও উপসর্গ খুবই প্রয়োজনীয় বিষয়।

মূল কথা হল:

  • ভাষার শব্দ ভাণ্ডার বৃদ্ধি।
  • ভাষা ও সাহিত্যের সৌন্দর্য বৃদ্ধি।
  • ভাষাকে সহজ-সরল করণ এবং
  • ভাষাকে আকর্ষণীয় করতে উপসর্গের ভূমিকা অপরিসীম।

পরিশেষে বলা যায় ভাষা ও সাহিত্যের বহুমাত্রিক ব্যবহার, সমৃদ্ধি ও সৌন্দর্য সৃষ্টির ক্ষেত্রে উপসর্গের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম ও অনস্বীকার্য।

####

এই পোস্ট থেকে আমরা উপসর্গ কাকে বলে? উপসর্গের প্রয়োজনীয়তা এবং নতুন শব্দ গঠনে উপসর্গের ভূমিকা সম্পর্কে

 জানতে পারলাম । পোস্টটি কেমন লাগলো আমাদের কমেন্ট করে জানান। ধন্যবাদ।

One Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button